কবিতা রাইটার : মুহাম্মদ নুরুল কবির করিমী।
আমাকে খোঁজিও বন্ধু তুমি
মাতামুহুরী নদীর তীরে ,
যেখানে কৃষক শস্য ফলায়
কাঁদা মাটির বক্ষ চিরে ।
আমাকে পাবে বটের মূলে
শিশির ভেজা দূর্বাঘাসে ,
আমি রহিব চৈত্র নিশিতে
চন্দ্রমল্লিকার আশে পাশে ।
আমি আসিব ভরা জ্যোৎস্নায়
চাঁদের পরীদের মেলায় ,
আমাকে পাবে বন্ধুরা খোঁজে
পড়ন্ত বিকেলের খেলায় ।
শীতের রাতে পুঁথির আসরে
আসবো গো আমি বন্ধু ,
তোমাদের ক’রে সঞ্চিত রাখি
কিছুটা বেদনা-বিধুর সিন্ধু ।
চপলা,চটুলা গ্রাম্য বধূরা
জলকে নামে যে ঘাটে ,
ধান-শিশুরা দখিনা বা’য়ে
আনন্দেতে নাচে মাঠে ।
আমাকে পাবে বন্ধু তুমি
মাতামুহুরীর মিষ্টি জলে ,
যেখানে শত রূপালী মৎস্য
জেলেরা তোলে জালে ।
হেমন্তের পাকা ধানের আ’লে
জাগিব সেই প্রত্যুষ কালে ,
রহিব আমি শালিকের দলে
বাংলার কুঁড়ে ঘরের চালে ।
বর্ষার জলে পাহাড়ি ঢলে
দু’কূল যদি ছেপে যায় ,
আমাকে পাবে হংস দলে
বৃষ্টিভেজা কোনো না’য় ।
আমাকে দেখিও বৃষ্টির ফোঁটায়
কোনো এক মেঠো প্রান্তরে ,
যেখানে সাদা-কালো হংস-মিথুন
মনের আনন্দতে সন্তরে ।
গহীন পাহাড়ে বাঁশরী বাজে
কোনো এক মার্মা গ্রামে ,
ঝর্ণার ঝিরিঝিরি ছন্দে তুমি
আমাকে পাবে নিসর্গধামে ।
চৈতালী দিনে রাখালী গানে
দুপুর যখন নেমে আসে ,
বটের ছায়ায় পথিক ঘুমালে
আমাকে পাবে তার পাশে ।
সন্ধ্যের ঐ গোধূলি আকাশে
সাথী হারা পাখি উড়ে ,
আমাকে খোঁজিও বন্ধু তুমি
সবুজ টিয়েদের ভীড়ে ।
আমাকে পাবে শীতের দিনে
শিশির ভেজা নিঝুম গাঁয়ে ,
যেথা ভাঙাঘরে শিশুরা হাসে
রসের ভাপা পিঠা খেয়ে ।
বৈশাখী ঝড়ে মাতাল হাওয়ায়
কাঁচা আম ঝরে পড়ে ,
আমাকে পাবে কুড়ানির দলে
পুরনো পুকুরের পাড়ে ।
সুজলা সুফলা সোনার বাংলা
আমার প্রিয় জন্ম ভূমি ,
মরনের পরেও বাসিব ভালো
হাসিব তোমার বক্ষ চুমি ।
পূবের বিলে শাপলা দোলে
অপরূপা তার শোভা ,
আমি রহিব শালুক হাতে
প্রভাতের জাগৃতি আভা ।
একজনমে ভরবে নাতো মন
জন্মভূমিকে ভালোবেসে ,
আসিব ফিরে বারে বারে বন্ধু
এই স্নিগ্ধ শান্ত পরিবেশে ।